List

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর পালে জোরেশোরে হাওয়া লেগেছে বলেই মনে হয়। ইতোমধ্যেই বেগম খালেদা জিয়া তার দলের ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। এইচ এম এরশাদ ও তাঁর দল জাতীয় পার্টিও জোট গঠনের জন্য বেশ দৌঁড় ঝাঁপ শুরু করেছেন। একটি বৃহৎ জোট গঠন করে ক্ষমতায় যাওয়াই এরশাদের লক্ষ্য বলে মনে হচ্ছে। অন্যদিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এখন থেকেই নৌকা মার্কার পক্ষে ভোট চাওয়া শুরু করেছেন। অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের রাজনীতি ২০১৮ সালের নির্বাচনকে ঘিরে বেশ জমে উঠছে বলেই মনে হয়।
১০ মে, ২০১৭ সালে ৩৭টি বিষয়ে ২৫৬-দফা সংবলিত ‘ভিশন-২০৩০’ ঘোষণা করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন। এই ভিশন উপস্থাপনকালে তিনি রাজনীতিতে নতুন ধারা ও অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দেন।
বিএনপির ঘোষিত ভিশন-২০৩০ আমি খুব মনোযোগ দিয়েই পড়েছি। তাতে এমন কোনো চমক নেই যা ‘ভিশন-২০২১’ এ নেই। যা কিছু চমক তাহলো সেই জায়গাগুলো যে জায়গাগুলোর জন্য জামায়াত বর্তমানে বেকায়দায় আছে, সংবিধানের এবং প্রচলিত আইনের কয়েকটি ধারায় বিএনপি সংশোধনীর প্রস্তাব পেশ করেছেন ভিশনে। ওই ধারাগুলো পরিবর্তন করাটা এই মুহূর্তে জরুরি নয় দেশ ও দেশের মানুষের জন্য। তবে বিএনপি ও জামায়াতের জন্য খুব দরকার, তাই সেগুলো পরিবর্তন করতে বিএনপি আগ্রহী হবে এটাই স্বাভাবিক। ভবিষ্যতে হাওয়া ভবন, খোয়াব ভবন বা তারেক জিয়ার ভিশনের কোন কথা নেই।
আগামী নির্বাচন এমন একটা সময়ে অনুষ্ঠিত হবে যে সময়টা বিএনপির জন্য হবে অগ্নিপরীক্ষাতুল্য। বিএনপি-জামায়াত ছাড়া নির্বাচনে যাওয়া মানে নিশ্চিত ভরাডুবি। বিগত দিনের নির্বাচন পরিসংখ্যান অন্তত তাই বলে। আগামী নির্বাচনে জামায়াত অংশ নিতে পারবে না, সে ক্ষেত্রে জামায়াতের ভোট বিএনপির বাক্সে গেলেও বিএনপিকে একা একাই মাঠে থাকতে হবে। অবশ্য এই মুহূর্তে একা একা মাঠে টিকে থাকার সামর্থ্য বিএনপির আছে কিনা সেই বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে। বিএনপি যা লুটপাট করেছিল এতদিনে সেই পুঁজি প্রায় শেষ হয়ে গেছে। হাওয়া ভবনে এখন আর কমিশন ব্যবসা নেই, সিন্ডিকেট নেই, কোকো ১, ২, ৩, ৪ ইত্যাদির ব্যবসা মন্দা, ড্যান্ডি ডাইংও খারাপ অবস্থায়, দলীয় নেতাকর্মীরা সকলেই প্রায় সীমাহীন দুর্নীতির দায়ে পলাতক বা দলত্যাগী। জামায়াতের কোনো কাজেও বিএনপি আসতে পারছে না যে জামায়াত তাদের অর্থ যোগান দিবে। সুতরাং কোমর ভাঙ্গা দল নিয়ে বিএনপি কতটুকু লড়াই করতে পারবে বা আদৌ পারবে কিনা সেটাই বিবেচ্য।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বর্তমানে বিএনপি বা জাতীয় পার্টি ফ্যাক্টর নয়, ফ্যাক্টর আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের বিকল্প এখন আওয়ামী লীগই। যদি বড় কোনো দুর্যোগ না ঘটে তাহলে এ মুহূর্তে উন্নয়নে, পরিকল্পনায়, রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় আওয়ামী লীগের ধারে কাছে কেউ নয়। কৃত্রিম জিনিস আর আসল জিনিস কখনোই এক নয়। কৃত্রিম কখনোই আসলের বিকল্প হতে পারে না। হয়তো আসলের অভাব দেখা দিলে মানুষ নকল দিয়ে কাজ চালায় কিন্তু আসল পেলে কে নকল জিনিস চায়?
স্বাধীন বাংলাদেশে পঁচাত্তরের পরে যে দুটি রাজনৈতিক দল দীর্ঘদিন ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল সেগুলো ছিল কৃত্রিমভাবে প্রতিষ্ঠিত দল। ক্ষমতায় আসীন থাকাকালে জেনারেল জিয়া তথাকথিত ১৯-দফার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিএনপি আর পরবর্তীকালে জেনারেল এরশাদ ১৮-দফার ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতীয় পার্টি। বিএনপি মূলত রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস, ন্যাপ, সুবিধাবাদীদের নিয়ে গঠিত ওরস্যালাইন পার্টি। ক্যান্টনমেন্টের অন্ধকার কুঠুরিতে জন্ম নেয়া এই দলটি বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পায়ে কুড়ালের প্রথম কোপটি মারে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস যারা জানেন, তারা নিশ্চয়ই মনে করতে পারেন পঁচাত্তর পরবর্তী জিয়া সরকার ছিল অবৈধ। জিয়া আইয়ুব খানের মতো হ্যাঁÑনা ভোটের আয়োজন করেছিলেন দেশকে পাকিস্তানি ধারায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। এই অবৈধ জিয়া সরকার সারাদেশে সৃষ্টি করেন এক দুর্বিষহ আতঙ্ক। তার সীমাহীন নির্যাতনে জেলখানা ভরে যায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী দ্বারা। কেউ কেউ চলে যান আন্ডার গ্রাউন্ডে। আন্ডার গ্রাউন্ডেও যখন সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়, তখন তারা বাধ্য হয় হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে দেশ ত্যাগ করতে। জিয়ার শাসনামলে প্রতি রাতে দেশে ‘মার্শাল ল’ থাকতো। জনজীবন ছিল চরম অনিরাপত্তার ভেতর। সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে জিয়া বাংলাদেশে যে কালো আইন তৈরি এবং মুজিব হত্যাকা-ের বৈধতা দান করে ঘাতকদের পুরস্কৃত করে তাতেই কি জিয়ার নির্দয় একনায়কের পরিচয় বহন করে না?
জিয়ার পরে আসে আরেক গণতন্ত্রহত্যাকারী জেনারেল এরশাদ। এরশাদও আওয়ামী লীগের নেতৃকর্মীদের ওপর ভয়ঙ্কর নির্যাতন চালায়। কেননা এরশাদ তো প্রকারান্তরে জিয়ারই ভাবশিষ্য। গুরু প্রদর্শিত পথই তো শিষ্যের জন্য অনুসরণীয়। তাই আওয়ামী লীগকে নির্যাতন করতে জিয়া ও বিএনপি যা যা করেছেÑ এরশাদ আর জাতীয় পার্টিও তা-ই করেছে। বরং এরশাদের নির্যাতন কোথাও কোথাও জিয়াকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। চোখ বেঁধে শেখ হাসিনাসহ ৩৩ জন নেতাকর্মীকে সেনানিবাসের কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে জনগণের প্রিয় পার্টি আওয়ামী লীগ ২৮৮টি আসন, ভোট পায় ৮৯ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগ পায় ২৯৩টি আসন, ভোট পায় ৭৩ দশমিক ২০ শতাংশ। ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে জেনারেল জিয়া প্রতিষ্ঠিত বিএনপি পায় ২০৭টি আসন, ৪১ দশশিক ১৬ শতাংশ ভোট আর আওয়ামী লীগ পায় ৩৯টি আসন এবং ২৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোট। এখানে লক্ষ্য করার মতো একটি ব্যাপার হলোÑ ঘাতকের হাতে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পূর্বেও যে আওয়ামী লীগের ভোট ছিল ৭৩ দশমিক ২০ শতাংশ। তার মৃত্যুর পরে তার ভোটার সংখ্যা কিভাবে ২৪ দশমিক ৫৫ শতাংশে নেমে যায় আর হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা সেনাশাসক জেনারেল জিয়ার ভূঁইফোড় বিএনপি পায় ৪১ দশমিক ১৬ শতাংশ ভোট।
১৯৮৬ সালে স্বৈরশাসক এরশাদের শাসনামলে যে নির্বাচন হয় সেই নির্বাচন বিএনপি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সরে দাঁড়ায় এবং খালেদা জিয়া তথাকথিত আপসহীন নেত্রীতে পরিণত হন। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়কে ঠেকাতে ৪৮ ঘন্টা মিডিয়া ক্যু করে জাতীয় পার্টি নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেয়। এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি পায় ১৫৩টি আসন, ভোট পায় ৪২ দশমিক ১৫ শতাংশ। মিডিয়া ক্যু না হলে নির্বাচনের ফলাফল আওয়ামী লীগের পক্ষেই যেতো। ১৯৮৮ সালে আবার এরশাদের অধীনে নীল নকশার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কেউই অংশ নেয়নি। এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ২৫১টি আসন, ভোট পায় ৬৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ, ফ্রিডম পার্টি তথা কিলার পার্টি পায় ২টি আসন আর ৭২ দলীয় জোটের নেতা আ স ম আবদুর রব ১৯টি আসন পেয়ে হয় বিরোধী দলীয় নেতা হন।
এরপর ১৯৯১ সালে সর্বদলীয় রাজনৈতিক পার্টির অংশগ্রহণের মাধ্যমে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাতে বিএনপি পায় ১৪০টি আসন, আওয়ামী লীগ জোট পায় ১০০টি আসন এবং জাতীয় পার্টি পায় ৩৫টি আসন। এই নির্বাচনের ভোটের সংখ্যা বিশ্লে¬ষণ করে দেখা যায় বিএনপির বাক্সে পড়ে ৩০ দশমিক ৮১ শতাংশ ভোট আর আওয়ামী লীগ পায় ৩৩ শতাংশ ভোট, জাতীয় পার্টি পায় ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ ভাট। জামায়াত পায় ১৮টি আসন। জামায়াত-বিএনপির সিট এলাইন্সের ফলে বিএনপি ১৯৯১ সালে অপ্রত্যাশিতভাবে সরকার গঠন করে।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আবার এসে গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ে। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য নিজের অধীনে আয়োজন করে ষড়যন্ত্রের নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিএনপি পায় ২৭৮টি আসন, ফ্রিডম পার্টি পায় ২টি এবং স্বতন্ত্র পার্টি পায় ১০টি আসন। কিন্তু খালেদা জিয়া গণ-আন্দোলনের মুখে শেষ রক্ষা করতে পারলেন না। প্রচ- গণ-আন্দোলন ও জনতার মঞ্চ গঠন করার ফলে ১৯৯৬ সালের জুন মাসে তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে বাধ্য হন। যদিও তিনি বলেছিলেন পাগল ও শিশু ছাড়া কেউ নির্দলীয় নয়।
এই নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ ১৪৬টি আসন এবং ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে একুশ বছর পরে অর্থাৎ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পরে ক্ষমতায় আসীন হয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি পায় ১৯৩টি আসন এবং ৪০ দশমিক ৮৬ শতাংশ ভোট, আওয়ামী লীগ পায় ৬২টি আসন এবং ৪০ দশমিক ২১ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ এই নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ প্রায় সমসংখ্যক ভোট পেলেও আসন সংখ্যায় বিএনপি এগিয়ে থাকে। এবারও জামায়াতকে সাথে নিয়ে জামায়াতের ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ ভোট নিয়ে এবং ১৭টি আসন নিয়ে বিএনপি এগিয়ে যায়। ২০০১ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করে বিএনপি আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার নানামুখী ষড়যন্ত্র করে, রাজাকারদের মন্ত্রী বানায়, বাংলা ভাই সৃষ্টি করে এবং দেশজুড়ে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটায়। বিএনপির রক্তলোলুপ চক্রান্তে শাহ এ এম এস কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টারসহ আওয়ামী লীগের শত শত নেতাকর্মী নিহত হন। শেখ হাসিনাও ১৯ বার মৃত্যু ঝুঁকি থেকে বেঁচে যায়। এর মধ্যে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার কথা সবচেয়ে নির্মম আর মর্মান্তিকÑ এ সবই জ্বলন্ত ইতিহাস।
বিএনপি ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে যেমন ক্ষমতা ছাড়তে চায়নি তেমনি ২০০১ সালে ক্ষমতা পেয়েও তারা মেয়াদ পূর্ণ করে ক্ষমতা ছাড়তে টালবাহনা শুরু করে। এরপর আবির্ভূত হয় কিছু উচ্চাভিলাশী সামরিক ও বেসামরিক নেতার নেতৃত্বে আর্মি সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তারাও দুই বছর গণতন্ত্রকে জিম্মি করে রাখে। চেষ্টা চালাতে থাকে দুই নেত্রীকে মাইনাস করার। কিন্তু গণ-আন্দোলনের মুখে তারাও বাধ্য হয় ২০০৮ সালে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিক বিজয় অর্জন করে এবং মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার কাজে মনোনিবেশ করে। দেশে এখন সেই ধারাই অব্যাহত আছে। উপরের বিশ্লে-ষণ থেকে একটি বিষয় প্রতীয়মান হয়েছে যে, যখনই বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে তখনই আওয়ামী লীগ জয়ী হয়েছে। এ ধারা ১৯৭০ থেকে শুরু হয়ে ২০১৪ পর্যন্ত বিদ্যমান, ২০১৮ সালেও তার ব্যতয় হবে না।
ব্রেখটের একটি নাটকে সাতটি ঘোড়ার গল্প পড়েছিলাম। ছয়টি ঘোড়া সারাদিন হাড়ভাঙা খাটুনি খাটে অথচ তাদের দানাপানি কম, একটি ঘোড়া কাঁধে বন্দুক নিয়ে শুধু ঘুরে বেড়ায়। তার খানাপিনার ব্যবস্থা সবার চেয়ে আলাদা ও বেশি। বন্দুক কাঁধে ঘোড়াটি মূলত স্বৈরশাসক বা সেনাশাসকের প্রতীক। একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, যতদিন জিয়া, এরশাদ, খালেদাÑ এই তিনজন ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন, ততদিন তাদের হাতে ক্ষমতা ছিল। যেই তারা ক্যান্টনমেন্টের বাইরে চলে গেছেন অমনি তাদের ক্ষমতাও বদলে গেছে। ২১ বছর বাংলার মানুষ ক্যান্টনমেন্ট নির্ভর শাসনে থেকেছে। খালেদা জিয়ার ক্যান্টনমেন্টের বাড়িতে এখন ৪৫টি পরিবার বসবাস করে। অথচ এই বাড়িটি তার পরিবার একাই ভোগ করতো।
বাংলার মানুষ আজ ক্যান্টনমেন্ট নির্ভর ক্ষমতাবানদের চায় না। তারা ‘গণভবন’ আর ‘বঙ্গভবন’ নির্ভর ক্ষমতা দেখতে চায়। কেননা ‘গণভবন’ ও ‘বঙ্গভবন’ দুটোর সঙ্গেই বাংলার আপামর জনতার আবেগ জড়িয়ে আছে। ক্যান্টনমেন্টের সঙ্গে বাঙালির কোনো আবেগ জড়ানো নেই। ওখানে কেবলই ষড়যন্ত্র আর নিষ্পাপ সেনা সদস্যদের রক্তের দাগ লেগে আছে। যেই সেনাসদস্যরা জিয়া আর এরশাদের আমলে শহীদ হয়েছেন।
জেনারেল জিয়া এবং জেনারেল এরশাদ উভয়েই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। উভয়েই নানাপ্রকার চক্রান্ত করে আওয়ামী লীগকে তথা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে চেয়েছেন। আজ এদের পক্ষে কথা বলা মানে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কথা বলা, গণতন্ত্রের বিপক্ষেই কথা বলা। দেশে অনেক জঞ্জাল জমেছে। সেই জঞ্জাল পরিষ্কার করতে হলে, দেশ ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আওয়ামী লীগকে সময় ও সমর্থন দেওয়া দরকার। আশাকরি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ সে সুযোগ আওয়ামী লীগকে দেবে। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে দুর্বৃত্ত, চাঁদাবাজ বর্জন ও দুর্নীতি মুক্ত ইমেজ নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে। দেশের মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ চায়। যা একমাত্র আওয়ামী লীগেই দিতে পারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
শেখ হাসিনার মতো এমন ব্যতিক্রমী নেতৃত্ব দেশবাসী বিগত ৪৫ বছরে দেখেনি। তিনি চলনে-বলনে-আহ্বানে বাংলার নারীর প্রতিচ্ছবি। নেতৃত্বে দৃঢ়চেতা, রাজনৈতিক কৌশলে দূরদর্শী এবং সিদ্ধান্তে দৃঢ়চেতা এক ব্যক্তিত্ব। নেতাকর্মীদের শাসন-সোহাগ করা মা-মাটি-মানুষের ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের মানুষের নেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু ও চার নেতার হাত ধরে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।
১৬ মে, ২০১৭

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  Posts

1 10 11 12
June 17th, 2015

মোনায়েম সরকারঃ জীবন ও কর্ম

মোনায়েম সরকারঃ জীবন ও কর্ম মোনায়েম সরকার একজন স্থির, বিচক্ষণ, নিলোভ এবং সৎ রাজনীতিকের প্রতিভূ। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনীতির সকল […]

June 17th, 2015

Humane World Order

Humane World Order Dismemberment of the erstwhile Soviet Union and fall of the socialist regimes in Eastern Europe came as […]

June 17th, 2015

Refound United Nations to Combat Global Crises

Refound United Nations to Combat Global Crises AT the end of World War I, US President Woodrow Wilson decided that […]

June 17th, 2015

মূল পরিকল্পনানুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিজয়স্তম্্‌েভর বাস্তবায়ন প্রয়োজন

মূল পরিকল্পনানুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিজয়স্তম্্‌েভর বাস্তবায়ন প্রয়োজন বিগত ১৯৯৬ সালে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকার জাতীয় ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি স্থাপনা […]

June 17th, 2015

চুয়ান্ন’র যুক্তফ্রন্টের মতো মহাজোট হলে বিজয় অবশ্যম্্‌ভাবী

চুয়ান্ন’র যুক্তফ্রন্টের মতো মহাজোট হলে বিজয় অবশ্যম্্‌ভাবী গত ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে আমার […]

June 17th, 2015

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনের অসমাপ্ত আত্মজীবনী

বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত জীবনের অসমাপ্ত আত্মজীবনী বাংলায় আমরা যাকে বলি আত্মজীবনী তার ইংরেজি প্রতিশব্দ Autobiography শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন William Taylor· […]

June 17th, 2015

ধর্মনিরপেক্ষতার শক্তিই উপমহাদেশে শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে

ধর্মনিরপেক্ষতার শক্তিই উপমহাদেশে শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে প্রবন্ধটি লিখতে বসে আমার বেগম রোকেয়ার ‘নূর-ইসলাম’ প্রবন্ধটির কথা মনে পড়ে […]

June 17th, 2015

যেভাবে আমরা জানাই প্রতিবাদ

যেভাবে আমরা জানাই প্রতিবাদ আমি ছিলাম বঙ্গবন্ধু গঠিত বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) অন্তর্ভুক্ত জাতীয় যুবলীগ আহ্বায়ক কমিটির ২১ নম্বর […]

June 17th, 2015

জেল থেকে লেখা কয়েকটি চিঠিতে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও মানবিক প্রতিভার াঁক্ষর মেলে

জেল থেকে লেখা কয়েকটি চিঠিতে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ও মানবিক প্রতিভার াঁক্ষর মেলে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান […]

June 16th, 2015

বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের চিঠিপত্র [মোনায়েম সরকার যখন নির্বাসনে তাঁকে লেখা বিশিষ্ট ব্যক্তির চিঠিপত্র]

বিদেশে অবস্থানরত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের চিঠিপত্র থেকে মোনায়েম সরকারের প্রবাস জীবনের কর্মকাণ্ডের একটি খণ্ড চিত্র পাওয়া যাবে। তার বেশিরভাগ চিঠিপত্র অ্যারোগ্রামে […]