List

ক্রান্তিকালে বাংলাদেশ : কতিপয় বিপথগামী রাজনীতিকের অতীত-বর্তমান

মোনায়েম সরকার
পৃথিবীর দেশে দেশে রাজনীতি আজ ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠছে। সবদেশে এখন পরিলক্ষিত হচ্ছে অপরাজনীতির হিংস্র বিভৎস রূপ। ইউরোপ বলি আর এশিয়া, আমেরিকাই বলিÑ সর্বত্রই এখন অপরাজনীতি শেকড় গেড়ে বসেছে। এই মুহূর্তে পুরো পৃথিবী জুড়েই বয়ে যাচ্ছে লোভী, উন্মাদ, ষড়যন্ত্রকারী রাজনৈতিক নেতাদের তপ্ত নিশ্বাস। তাদের জীবনবিনাশী উষ্ণ নিশ্বাসে দগ্ধ হচ্ছে পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষ। যতই দিন যাচ্ছে ততই বেড়ে চলছে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ। আগের দিনে রাজনীতির উদ্দেশ্য ছিল গণমানুষের সেবাদান। আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি এর ঠিক উল্টো ছবি। উল্টো দিকে চলা রাজনীতি কখনোই মানুষের জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে না। দেশে দেশে অপরাজনীতির এ ধারা অব্যাহত থাকলে পৃথিবী ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে পৌঁছাবে।
বাংলাদেশের ভূখণ্ডে স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই দুই শ্রেণির লোকের বাস। একশ্রেণি এদেশের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী ও এদেশের মানুষের পারস্পরিক সম্প্রীতিতে আস্থাবান। অন্য শ্রেণি এদেশের অখ-তায় মোটেই বিশ্বাসী নয়। এরা ধর্মের নামে অধর্ম চালিয়ে শোষণ করতে চায়। এদেশের নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে নিজেদের হীন স্বার্থ বজায় রাখতে চায়। একটা বিষয় লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, ১৯৭১ সালে যারা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলার মুক্তিকামী জনতার কাছে পরাজিত হয়েছিল, সেই পরাজিত শক্তিরা তাদের পরাজয়কে মেনে না নিয়ে উল্টো বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। এই শান্তিবিঘœকারী দেশদ্রোহীরা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি ক্ষমতায় থাকলে তাদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দেশ চালনার দায়িত্ব পেলে সুযোগ বুঝে গর্তে ঢুকে যায়। স্বাধীনতার এত বছর পরেও এদের নির্মূল করা যায়নি। এদের বিনাশ করতে না পারলে এদের হাত থেকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের শান্তি ও উন্নয়নকামী, অসাম্প্রদায়িক জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়।
গণতান্ত্রিক রাজনীতির ধারায় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতান্ত্রিক দেশে সরকার পরিবর্তন হয়। দেশের জনগণ ঠিক মতো বুঝে শুনে ভোটাধিকার প্রয়োগ না করলে, দেশবিরোধীরা ক্ষমতায় চলে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে পেছন দিকে চলে যাবে দেশ। দেশের স্বার্থেই সঠিক ব্যক্তি ও দলকে ভোট দেওয়া প্রত্যেকটি নাগরিকের একান্ত দায়িত্ব। এবার বাংলাদেশের বিজয়ের মাসে (৩০ ডিসেম্বরে) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের নির্বাচন নানা কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন বাংলাদেশের মানুষের সামনে অতীতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষেরই মুখোশ খুলে দিচ্ছে। এবারের নির্বাচনে অনেক মুক্তিযোদ্ধাই যোগ দিয়েছেন রাজাকার-দেশদ্রোহীদের ছাতার তলে। মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সোনালি অতীত ভুলে গিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকদের রক্ষা করতে জোটবদ্ধ হয়েছেন। ঠিকাদারি নিয়েছেন দেশবিরোধীদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পুনর্বাসিত করার। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই দৃশ্য আমি কখনো কল্পনা করতে পারিনি। এদের এই দৃষ্টিকটু পরিবর্তন আমাকে ভীষণ ব্যথিত করেছে। আমি মনে করি, আমার মতো পুরো জাতি আজ এদের উদ্ভট পরিবর্তনে বিস্মিত-বেদনাহত। যা অকল্পনীয় ছিল তা-ই এখন ঘটে যাচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। একটি কথা আছেÑ ‘রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই’। কথাটি যে কতখানি সত্য বাংলাদেশের ষোলো কোটি মানুষ আজ হাড়ে হাড়ে তা উপলব্ধি করছে।
আজ আমি প্রবীণদের জন্য নয়, নবীনদের জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের দুই একটি ঘটনা উত্থাপন করতে চাই। আমি মনে করিÑ নবীনরাই বর্তমান বাংলাদেশের কাণ্ডারি। এরাই এখন আমাদের ভরসা। এদের কাছেই তুলে ধরতে চাইÑ কতিপয় বিপথগামী রাজনীতিকের অতীত ও বর্তমানের দিনলিপি। আজ যারা ঐক্য-ঐক্য বলে জাতির সামনে জাতির হাজির হয়েছেÑ তাদের অতীত না জেনে অনেক তরুণই বিভ্রান্ত হচ্ছে। এই সুযোগ সন্ধানী বিভীষণদের কালো ইতিহাস জেনে রাখা দরকার। এরা বাইরে বলছে মুক্তির কথা, ভেতরে ভেতরে এরা দেশ ও দেশের মানুষের হাতে শৃঙ্খল পরাতে বদ্ধ পরিকর। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে এদেশ চলে যায় বাংলাদেশবিরোধী চক্রের হাতে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর তাদের বিকৃত উল্লাস আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। ’৭৫-পরবর্তী কালপর্বে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতাকর্মীরা দলে দলে আওয়ামী লীগ থেকে সরে দাঁড়াতে শুরু করে। এই নেতারা রাজনীতি থেকে সরে গেলে তখন খুব একটা সমস্যা হতো না; কিন্তু এরা গিয়ে জুটে ক্যান্টনমেন্টে জন্ম নেওয়া বিএনপিতে। এই দলত্যাগী নেতাদের মধ্যে ছিলেনÑ ইউসুফ আলী, সোহরাব হোসেন, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, কে এম ওবায়দুর রহমান প্রমুখ। পরবর্তীকালে রক্তের উত্তরাধিকার বনাম আদর্শের উত্তরাধিকারÑ এই দ্বন্দ্বে ১৯৮৩ সালে আবদুর রাজ্জাক ও মহিউদ্দিনের বাকশালের পুনর্গঠনও আওয়ামী লীগকে কম বিপদে ফেলেনি। ছাত্র সংগঠনের প্রায় সবাই বাকশালে যোগ দেয়। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে যাচ্ছে ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর মিসেস ইন্দিরা গান্ধির কথা। আমি তখন ভারতে স্বেচ্ছানির্বাসনে ছিলাম। দেখেছি সেই মুহূর্তে তিনি কী পরিমাণ অসহায় হয়ে গিয়েছিলেন।
১৯৯১ সাল বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় ঘটনার জন্ম দেয়। এই তথাকথিত গণতান্ত্রিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ী হওয়ার কথা থাকলেও আওয়ামী লীগ বিজয়ী হতে পারেনি। যদিও সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিএনপির চেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিল, কিন্তু আসন সংখ্যায় পিছিয়ে যায় আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনের ভোট কারচুপি দেশবাসীর বিস্মৃত হওয়ার কথা নয়। নির্বাচন-পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় শেখ হাসিনা ‘সূক্ষ্ম কারচুপি’র কথা উল্লেখ করলেও আওয়ামী লীগের আরেক নেতা ড. কামাল হোসেন বিবিসিকে জানান নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এর ফলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কামাল হোসেনের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ড. কামাল হোসেন প্রথমে গণতান্ত্রিক ফোরাম নামে সেমিনারের আয়োজন করেন। এই সেমিনারে দেশের অনেক বুদ্ধিজীবীই অংশ নেন। পরে ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতি নিয়ে গণফোরাম নামে একটি দল গঠন করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দলছুট সুবিধাবাদী নেতাদের সমন্বয়ে। গণফোরামে সেদিন যারা যোগ দিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে তৎকালীন কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি সাইফউদ্দিন আহমেদ মানিক, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদ, সামসুদ্দোহা, নূহ-উল-আলম লেনিন, শেখর দত্ত, ন্যাপের পঙ্কজ ভট্টাচার্য, রণেশ মৈত্র, আওয়ামী লীগের ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, জহুরুল ইসলাম, মোস্তফা মহসীন মন্টু ছিলেন।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করে মেয়াদ পূর্ণ করার পরেও ক্ষমতা ছাড়তে টালবাহানা শুরু করে। তারা অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘ভোটার বিহীন ভোট’ করে। জনগণ এই প্রহসনমূলক নির্বাচন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। শুরু হয় গণ-আন্দোলন। ঢাকার বুকে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জনতার মঞ্চ’। গণআন্দোলনের মুখে মাত্র তিন মাসের মাথায় বিএনপি পুনরায় নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। গণফোরাম ও ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে আরেকটি পুরাতন কথা দেশবাসীকে একটু মনে করিয়ে দিতে চাই। যদিও অনেকেই এসব কথা জানেন। ড. কামাল যখন আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন তখন তিনি মন্ত্রী ছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্টশিয়াল প্রার্থী ছিলেন। অথচ সোনালি অতীত তিনি এক নিমিষেই ভুলে গেলেন দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের প্রলোভনে। আওয়ামী লীগের উপর তখন আমেরিকার চাপ ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে নাÑ এই প্রস্তাব শেখ হাসিনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেন না। তখন আওয়ামী লীগে ভাঙন ধরানোর জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দিয়েই ‘গণফোরাম’ নামে আরেকটি প্যারালাল আওয়ামী লীগ গঠন করা হয়।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে সেই দুঃখজনক কাজটিই অত্যন্ত ঠা-া মাথায় সম্পন্ন করেন ড. কামাল হোসেন ও তার কয়েকজন স্বার্থপর অনুগত। এই গণফোরামের সদস্যসচিব ছিলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। আরেকজন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার জন্য বহুদিন গণফোরামের সেক্রেটারির পদ শূন্য রাখা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার আর গণফোরামে যোগ দেওয়া হয়নি। দলের মধ্যে এত ভাঙনের পরেও বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর মতো দৃঢ় মনোবল ও সাধারণ নেতাকর্মীর জীবনবাজি রেখে সংগ্রাম করার ফলে আওয়ামী লীগ আবার ঘুরে দাঁড়ায়। আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগের দলছুট নেতারা লজ্জা- শরমের মাথা খেয়ে একে একে উঠতে থাকে আওয়ামী লীগের নৌকায়। আওয়ামী লীগের সুবিধাবাদী নেতারা আওয়ামী লীগের শরীরটাকে বহুবার ক্ষতবিক্ষত করেছে। এখনও সেই ধারা অব্যাহত আছে। চক্রান্তকারীরা এখনও চক্রান্ত করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে নবীন ভোটার তথা কা-ারিকে হুঁশিয়ার থাকা অতীব জরুরি। একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, আওয়ামী লীগ কখনোই দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করেনি। অথচ আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্যসব দলই বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে সীমাহীন প্রতারণা করেছে।
বাংলাদেশে তথাকথিত ‘সুশীল সমাজ’ বলে বিশেষ প্রজাতির একদল মানুষ আছে। এরা টকশোতে কথার ফুলঝুড়ি ছোটান। দর্শকহীন সভা-সেমিনারে দেশবিরোধী বিষোদ্গার করেন। এরা আওয়ামী লীগ সরকারের নেতিবাচক সমালোচনা ছাড়া কোনো ইতিবাচক কথা খুঁজেই পান না। এরা বলেনÑ দেশে গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার নেই, ভোটের অধিকার নেই, জীবনের নিরাপত্তা নেই, বাক-স্বাধীনতা নেই ইত্যাদি। যেসব সুশীল এসব কথা বলেন, তাদের আমি জিজ্ঞেস করতে চাইÑ স্বৈরাচারী জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে কি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটের অধিকারের নিশ্চয়তা ছিল? ওই সময় এসব সুবিধালোভী সুশীল-সুজন কোথায় ছিলেন? তখন তো কোনো সভা-সেমিনারে এদের দেখা যায়নি। সেদিনের চেয়ে বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি আজ সর্বাংশেই উন্নত ও বিশ্বকর্তৃক প্রশংসিত। যেই পাকিস্তানের কাছ থেকে আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম, সেই পাকিস্তানের জনগণই আজ সেদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলছেনÑ ‘তারা বাংলাদেশের মতো হতে চায়’। পাকিস্তানের জনগণই যখন বাংলাদেশের জীবনমান প্রত্যাশী তখন ধরেই নিতে হবে বাংলাদেশ আসলেই অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ সুশীলই ঘুষের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ, অথচ এরা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য নিজেরাই ঘুষ লেনদেন করেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে ঘর-বাড়ি, জায়গা-জমি কেনেন, আয়কর ফাঁকি দেন। এই সুশীলদের বেশির ভাগের গায়েই আছে উৎকট দুর্গন্ধ। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবেÑ এই সব সুশীলদের ইনকামের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, চলা-ফেরা-বিলাস-ভ্রমণে আকাশ-পাতাল ফারাক। এরা কিভাবে চলে, কাদের টাকায় চলেÑ বাংলাদেশের মানুষ আজ এসব জানতে চায়। আজকাল অনেকেরই ফোনালাপ ফাঁস হচ্ছে। সুশীলদের ফাঁস হওয়া ফোনালাপে যেসব তথ্য বেরিয়ে আসছে তাতে দেশের মানুষ হতবাক হয়ে যাচ্ছে। এরা বেশিরভাগই মুখোশ পরে আছে, এরা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। এসব সুশীলদের ইরিয়ে-বিনিয়ে বলা মিষ্টি ভাষা থেকেও দেশের মানুষ ও তরুণ প্রজন্মকে সতর্ক থাকা দরকার।
’৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস মূলত ষড়যন্ত্র আর ছদ্মবেশীদের ইতিহাস। বাংলাদেশের মানুষ আজ সুষ্ঠু ধারার গণতান্ত্রিক রাজনীতি পছন্দ করেন। আর কোনো অশুভ শক্তি বাংলাদেশের উপর শ্যেনদৃষ্টি না ফেলুক। বাংলাদেশ এগিয়ে যাক পরিচ্ছন্ন গণতান্ত্রিক ধারায়। এটাই আজ ষোলো কোটি মানুষের আন্তরিক প্রত্যাশা। আমরা কথায় কথায় ক্রান্তিকাল শব্দটি উচ্চারণ করি। বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থেই আজ ক্লান্তিকাল অতিক্রম করছে। আজ বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম তথা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তিকে বিজয়ী করে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এর ব্যত্যয় হলেই দেশে নেমে আসবে সেই পরিচিত অন্ধকার। একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশকে আমরা অন্ধকার নয়, আলোর পথেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
মোনায়েম সরকার : রাজনীতিবিদ ও কলামিস্ট
০৯ ডিসেম্বর, ২০১৮

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  Posts

1 8 9 10 12
November 29th, 2016

ভোগান্তরি আরকে নাম ভারতরে ভসিা

১১ নভম্বের, ২০১৬ তারখিে ‘দনৈকি আমাদরে সময়’-এ কবি ও সম্পাদক অমতি গোস্বামী ‘ভারতীয় ভসিা প্রাপ্তি নয়িে টালবাহানা’ শরিোনামে একটি কলাম […]

November 29th, 2016

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ : রোজ গার্ডেন টু সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

বঙ্গীয় ভূখ-ে রাজনৈতিক দুরবস্থার অবসান ঘটাতে প্রথম যে দল জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে বুক ফুলিয়ে দাঁড়ায় তার নাম বাংলাদেশ আওয়ামী […]

November 29th, 2016

পজেটিভ বুদ্ধিবাদিতা ও বুদ্ধিজীবীর দায়

আজ তেসরা নভেম্বর জাতীয় জেলহত্যা দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে নির্মমভাবে শহিদ হয়েছিলেন জাতীয় চার […]

November 29th, 2016

শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈরাজ্য

বাংলাদেশের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে জনমনে সীমাহীন অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এমন কোনোদিন নেই যেদিন পত্র-পত্রিকায় ও টেলিভিশনের টক-শোগুলোতে আমাদের শিক্ষার অব্যবস্থাপনা […]

October 4th, 2016

যখন প্রশ্ন আসে যুদ্ধ না শান্তি? আমরা জবাব দেই শান্তি শান্তি শান্তি!

যখন প্রশ্ন আসে যুদ্ধ না শান্তি? আমরা জবাব দেই শান্তি শান্তি শান্তি! মোনায়েম সরকার বর্তমান পৃথিবী হিংসা আর স্বার্থপরতায় উন্মত্ত […]

September 8th, 2016

বিশ্বব্যাপী জাতীয়তাবাদী চেতনার উত্থান ও শোষিতের জেগে ওঠা

বিশ্বব্যাপী জাতীয়তাবাদী চেতনার উত্থান ও শোষিতের জেগে ওঠা মোনায়েম সরকার আমার বিগত দিনের একটি লেখায় বলেছিলামÑ সারা পৃথিবীর মানুষকে ইতিহাস, […]

September 6th, 2016

জন কেরির ঢাকা সফর ও ফিরে দেখা একাত্তর

জন কেরির ঢাকা সফর ও ফিরে দেখা একাত্তর মোনায়েম সরকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত ২৯ আগস্ট, ২০১৬ তারিখে ঢাকা […]

August 15th, 2016

বঙ্গবন্ধুর জাতীয় ঐক্যের ডাক

আগস্ট শোকের মাস। এই আগস্ট মাসেই বাঙালি জাতি হারিয়েছে তাদের অনেক কৃতী সন্তান। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আমরা ১৯৪১ সালের ৭ […]

July 19th, 2016

অতীত আলোকে সংলাপের আদৌ প্রয়োজন আছে কি?

অতীত আলোকে সংলাপের আদৌ প্রয়োজন আছে কি? মোনায়েম সরকার সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও সংলাপ- এই তিনটি শব্দ আজ বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে, […]

July 19th, 2016

সমাজতন্ত্রের রক্তাক্ত অতীত ও কাল্পনিক ভবিষ্যৎ

সমাজতন্ত্রের রক্তাক্ত অতীত ও কাল্পনিক ভবিষ্যৎ মোনায়েম সরকার মানুষ শোষণ থেকে মুক্তি চায়। মুক্তি মানে মৌলিক অধিকারের প্রশ্নে সব মানুষ […]